সোহেল রানা ॥
বালিয়াকান্দিতে বীরঙ্গনার নুরজাহান বেগম বারাদ্দকৃত সরকারী জমির দখল বুঝে পেয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুম রেজা মঙ্গলবার বিকেলে উপস্থিত থেকে বরাদ্দকৃত জমি বুঝিয়ে দেন। এ বিষয়ে রাজবাড়ীবিডিতে ইতিপূর্বে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সরেজমিন গিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম রেজা, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের অফিস সুপার মোঃ মনিরুজ্জামান, নবাবপুর ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আতাউর রহমানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের উপস্থিতিতে জমিতে সাইন বোর্ড ও লাল নিশান টাঙ্গিয়ে বীরঙ্গনা নুরজাহান বেগমের জমির দখল বুঝে দেন।
বীরঙ্গনা নুরজাহান বেগম জানান, “১৯৭১ সালে বয়স ছিল ১৩। কিশোরী হলেও আমাকে রেহাই দেয়নি নরপশু রাজাকাররা। মা ও ছোট ভাইকে মারপিট করে বাড়ী থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল তারা। আমাকে তারা তুলে দিয়েছিন অবাঙ্গালী বিহারীদের হাতে। একটি বন্ধ ঘরে আটকে রাখা হয় আমাকে। রাত হতেই নরপশুরা হায়নার মত আমার উপর হামলে পড়ে। চিৎকার করে কাঁদলেও বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি কেউ। দিনে এক বেলা অথবা দুই বেলা খাবার দিতো তারা।
প্রায় দুই মাস অসহায় অবস্থায় অমানবিক নির্যাতন সইতে হয়েছে আমাকে। আমার মত আরো ১২/১৩ জন মহিলাকে সে সময় আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। তার মধ্যেই দুই জন মারাও যায়। যারা বেঁচে ছিলাম তারা প্রতিনিয়ত ডাকতাম বিধাতাকে। বিধাতা হয়তো আমার কথা শুনেছেন, দেশ স্বাধীনের পর মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধকরে হায়নাদের পরাজিত করে এবং আমাকে উদ্ধার করে। তার স্বামীর নাম মোকাররম হোসেন। বাড়ী রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম রেজা জানান, মঙ্গলবার বিকালে সরেজমিন গিয়ে বীরঙ্গনা নুর জাহান বেগমের নামীয় জমিতে লাল নিশান ও সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দখল বুঝে দেওয়া হয়েছে।