মোজাম্মেল হক ॥
করোনা কালীন সময় স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় শখের বশে ঢাকা শামসুল হক স্কুলএন্ড কলেজের কাস টেনের ছাত্র তার নিজ বাড়ির ছাদে পালনের জন্য মাত্র ৪’শ টাকা করে ১০ জোড়া কবুতর ও ৪০টি সোনালী মুরগী কিনেছেন এক বছর আগে। সে থেকে শুরু করে এখন সফল কবুতর ও মুরগী খামারি গোয়ালন্দের পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড জুরান মোল্লার পাড়ার বাসিন্দা মো.জিহাদ আব্বাস (১৭)। প্রিয় শখ এখন লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে তার।
পৃথিবীর সব দেশেই দেখা যায় এ শান্তির প্রতীক কবুতর। বাংলাদেশসহ এ উপমহাদেশে কবুতর পালন করে অতি প্রাচীনকাল থেকে। জনপ্রিয় গৃহপালিত পাখি পারাবত। জনশ্রুতি রয়েছে প্রাচীনকালে গৃহপালিত কবুতর চিঠির আদান-প্রদান করত। বাংলাদেশের জলবায়ু এবং বিস্ত—ীর্ণ শষ্যতে কবুতর পালনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। পৃথিবীতে প্রায় ২০০ প্রজাতির কবুতর রয়েছে, এর মধ্যে বাংলাদেশে ৩০ প্রজাতির কবুতর রয়েছে। পূর্বে এ পাখিটি শখ করে পাল করা হতো। এখন সেই শৌখিনতা থেকে লাভজনক পেশায় পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, গোয়ালন্দ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জুড়ান মোল্লার পাড়া জিহাদ আব্বাস এর বাড়ী। নিজ বাড়ীর ছাদে বিভিন্ন প্রজাতির কবুতার ও সোনালী মুরগী পালন করছেন এবং এতে লাভবান হয়েছেন।
জিহাদ জানান, করোনা কালীন সময় আমার স্কুল বন্ধ থাকায় আমি ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ীতে চলে আসি। আমার আগে থেকেই খুব শখ কবুতার ও মুরগী পালন করা । তাই নিজ বাড়ীর ছাদে শখ করে কবুতর ও সোনালী মুরগী পালন করে এখন লাভজনক পেশা ও ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।
জালালি, গিরিবাজ, শুয়াচন্দন, কালোদম, গিয়া ,দেশিসহ বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর পালন করছেন। এক জোড়া জালালি কবুতর ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, গিরিবাজ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা এবং এক জোড়া শুয়াচন্দনের দাম ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত।
জিহাদ আব্বাসের বিভিন্ন জাতের ১০০-র বেশি কবুতর রয়েছে। গম, চাল, ভুসি, ভুট্টা ভাঙা, সরিষা, ধান, চাল, ছোলা বুট, মটর ডাল ফিটসহ পরিমিত পানি দিনে দু-তিনবার দিতে হয়। এতে প্রতি মাসে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকা খরচ করতে হয়। তিনি বলেন, কবুতরের বেশি খাবারেরও প্রয়োজন হয় না। প্রতিদিন দু-তিনবার খাবার ও পানি দিলেই হয়, তবে নিয়মিত এর বিষ্ঠা পরিষ্কার করতে হয়। তিনি আরো বলেন, প্রতি মাসে সব খরচ বাদে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা কবুতর বিক্রি করে আয় করেন। আর মাত্র কিছু দিন পরেই আমার ঢাকা যেতে হবে এখন ভাবছি একজন লোক রাখবো যাতে করে আমার কবুতার ও মুরগী গুলোকে দেখবাল করতে পারে।
জিহাদের মা শিরিন সন্তানা বলেন, আমারও অনেক শখ কবুতার ও মুরগী পালন করা। আমি আমার ছেলের সাথে সাথে কবুতার মুরগী গুলোর দেখাশুনা করা ও খারাব পানি দেই ।আমার ছেলে শখ করে কবুতার ও মুরগী পলন করাতে আমি অনেক খশি কারণ এইসব নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকছে। বাহিরে যাবার সুযোগ হচ্ছে না।তাছাড়া এক বছর হলো আমরা কোন মাংস কিনে খাচ্ছি না। নিজেদের পালন করা মুরগীর মাংসের তৃপ্তি একটু আলাদা।