সোহেল রানা ॥
ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ হাসিনা বেগম বুধবার পুলিশ সপ্তাহে আইজিপি পদক লাভ করেছেন। তাকে আইজিপি পদক পড়িয়ে দেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল একেএম শহিদুল হক।
জানা গেছে, হাসিনা বেগম গত ৩ জুন রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে রাজবাড়ীতে নারী পুলিশ সুপার থাকলেও জেলার পাঁচটি উপজেলায় কোনো নারী ওসি ছিলেন না। তিনিই প্রথম ওসি হিসেবে নিয়োগ পান। হাসিনা বেগম একজন সৎ ও চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা। নতুন কর্মক্ষেত্রে যোগদানের পর বাল্যবিয়ে বন্ধ, মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনাসহ বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করেন। যোগদানের পর থেকে প্রায় ১০-১২টি বাল্যবিয়ে বন্ধ, বেশ কিছু মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করাসহ ক্লুলেস মামলার তথ্য উদঘাটনে সাফল্যে অর্জন করেন। শুধু বাল্যবিয়ে বন্ধই নয়, অভিভাবকদের সচেতন করে তুলতে যৌতুক, ইভটিজিং, নারী-নির্যাতন, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ হ্রাসে নানা ধরনের পরামর্শ প্রদান করেন’।
হাসিনা বেগম ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে উপ-পরিদর্শক (এস,আই) পদে যোগদান করেন। তার প্রথম কর্মস্থল ছিল কুমিলা। তিনি ১৯৯৮-২০০১ সাল পর্যন্ত কুমিলা এবং ২০০১-০২ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
রপর তিনি ২০০২-০৬ ডিএমপি, ২০০৬-০৯ সাল পর্যন্ত এসবি এবং ২০১০-১১ সাল পর্যন্ত ডিবিতে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে কাজ শুরু করেন আর্মড পুলিম ব্যাটালিয়নে। সেখানে থেকে ২০১৫ সালে হাইতি শান্তিরক্ষা মিশনে যান। মিশন থেকে ফিরে ২০১৭ সালের আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারীতে যোগদান করে রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানায়। সর্বশেষ গত জুনে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানার ওসি হিসেবে নিয়োগ পান।
ভবিষ্যতে যারা পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করতে চান তাদের উদ্দেশে ওসি হাসিনা বেগম বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীতে যেমন রয়েছে চ্যালেঞ্জ, তেমনি রয়েছে আত্মতৃপ্তি। সেই সঙ্গে রয়েছে সমাজকে অপরাধমুক্ত করতে পারার অপার আনন্দ। নারীরা এখন পুলিশ বাহিনীতে সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। সৎ ও কর্মনিষ্ঠ থাকলে নবীনরা আরও ভালো করবে বলে আমার বিশ্বাস।’
তিনি সকল অফিসারদের আন্তরিকতার সাথে কাজ করা ও জনসাধারনের স্বতঃফুর্ত সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বালিয়াকান্দিকে অপরাধমুক্ত করতে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি সব ধরনের অপরাধ দমনেই তৎপর। এর মধ্যে মাদক কেনাবেচা, নারীদের আত্মহত্যা প্রবনতা, বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং, যৌতুক, নারী নির্যাতন সমস্যা নিরসন করাকেই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখেছেন। সকল অফিসারদের আন্তরিকতার কারণেই অপরাধ মুক্ত করা সম্ভব হবে। বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে আমাকে যোগ্য মনে করায় তিনি মাননীয় পুলিশ সুপার মহোদয়কে ধন্যবাদ জানান। আইজিপি পদক পাওয়ায় তার কাজের স্পৃহা আরো অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে বলে তিনি জানান।