পন্যবাহী কার্গো জাহাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌপথ। প্রতিদিন এ পথে পণ্যবাহি বিভিন্ন জাহাজ চলাচল করে। অথচ বর্তমান সেখানে নাব্যতা সংকটের পাশাপাশি নৌরুটের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য ডুবোচর সৃষ্টি হয়েছে।
এতে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা সাড়ে ১২ থেকে ১৩ ড্রাফটের মালবোঝাই কোন কোষ্টার জাহাজ সরাসরি সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী নৌবন্দরে পৌছাতে পারছে না। পথে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ৪ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় এসে জাহাজ গুলো নঙ্গর করে রয়েছে। শুক্রবার দুপুরে সেখানে নঙ্গর করা ছিল ২৬ টি জাহাজ।
পণ্য পরিবহনে দৌলতদিয়া-নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ। বর্তমান ওই নৌপথে নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি নৌপথের কাজীরহাট, বেটারির চর, নাকালিয়া, বেড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য ডুবোচর। এদিকে সাড়ে ১২ থেকে ১৩ ড্রাফটের জাহাজ চলাচলে কমপক্ষে ১৩ ফিট পানির গভীরতা প্রয়োজন। অথচ বর্তমান সেখানে পানির গভীরতা রয়েছে মাত্র ৬ থেকে ৮ ফিট। তাই নাব্যতা সংকটের কারণে তাদের জাহাজগুলো গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় এসে আটকা পড়ে আছে। বাধ্য হয়ে শতাধিক শ্রমিক ওই সব জাহাজগুলো থেকে সার, সিমেন্ট তৈরীর কাঁচামাল ‘ক্লিংটার’, পোট্রিখাদ্যসহ বিভিন্ন মালামাল নামিয়ে সেগুলো বোলগেট ও ট্রলারে বোঝাই করে তা গন্তেব্য নিচ্ছে।
চট্রগ্রাম থেকে নগরবাড়ীর উদ্দেশ্যে সার নিয়ে আসা উম্মে হাবিবা জাহাজের মাষ্টার আব্দুর রাজ্জাক রাজবাড়ীবিডিকে জানান, পথে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় হতেই অন্যান্য জাহাজের ন্যায় ১৩ ট্রাফটের জাহাজটিও নাব্যতা সংকটের কবলে আটকা পড়েছে। তাই জাহাজ থেকে মালগুলো দ্রুত নামিয়ে সেগুলো বোলগেট ও ট্রলারে করে বাঘাবাড়ী বন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’ এতে পণ্যের মালিকপক্ষকে বোলগেট ভাড়া ও লেবার খরচ বাবদ অতিরিক্ত টাকা গচ্ছা দিতে হচ্ছে।
উম্মে হাবিবা জাহাজের শ্রমিক রুপচান সরদার জানান, জাহাজ ভর্তি করে সার উত্তরাঞ্চলে নিয়ে যাবার উদ্দেশ্যে এসেছে। তবে নাব্যতার কারণে এখানে জাহাজ নঙ্গর করায় অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে তা গন্তব্যে নিতে হচ্ছে। এতে কোম্পানী আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
বিআইডব্লিটিএ আরিচা ঘাটের সহকারী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান ফোনে জানান, শুস্ক মৌসুমে প্রতিবছরই নদীর নব্যতা কমে যায়। এতে যে পরিমান গভীরতায় জাহাজ গুলো মালামাল পরিবহণ করবে সে পরিমান পানি থাকে না। বিষয়টি নিয়মিত ভাবে নৌবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। অথচ ওই বিজ্ঞপ্তির তোয়াক্কা না করেই জাহাজ গুলে মালামাল ভর্তি করে আসে। ফলে তাদের কিছুই করার নেই। তবে দৌলতদিয়া-নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌপথে ড্রেজিং-এর ব্যপারে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি কর্তৃপক্ষ।