মাসুদ রেজা শিশির ॥
ফাইলেরিয়া আক্রান্ত রফিকুল সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এবার এইচএসসি পাস করেছে। সে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চায়। কিন্তু ফাইলেরিয়া রোগের কারণে শরীরের বিভিন্ন স্থানে অস্বাভাবিক ভাবে মাংসপিন্ড বেড়ে যাওয়ায় দিন দিন তার হাঁটা-চলা কষ্টকর হয়ে পড়ছে।
পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। রফিকুল রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের চরঝিকড়ী মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত নজরুল বিশ্বাসের ছেলে। জন্মের ৪ বছর বয়সেই বাবা মারা যায়।
রফিকুলের মা আলেয়া বেগম বলেন, জন্মের পরই ওর শরীরে একটা কালো দাগ দেখা যায়। সেখান থেকেই দিনে দিনে তার শরীরে ফাইলেরিয়া রোগ ছড়িয়ে পড়ে। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারি নাই। ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ নামের একটি সংস্থার সহায়তায় ২০০৯ সালে ঢাকা মেডি এইড হাসপাতালে তার অপারেশন করা হয়। এরপর থেকে কিছুদিন ভাল ছিল। চিকিৎসকদের পরামর্শ ছিল আরও ২টি অপারেশন করানোর। কিন্তু টাকার অভাবে তা আর করা সম্ভব হয়নি। মা আর ছেলে মিলে তাদের দুইজনের সংসার চলে এনজিও সংস্থার ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে বাড়ির সামনে ছোট্ট মুদির দোকান চালিয়ে। কলেজ থেকে ফিরে রফিকুল মুদির দোকানে বসে।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও রফিকুল লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। সে পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ড. কাজী মোতাহার হোসেন কলেজ থেকে ২০১৭ সালে বি.এম শাখা থেকে এইচএসসি পাস করেছে। সে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চায়। কিন্তু ফাইলেরিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে যাওয়ায় তার পক্ষে হাঁটা-চলা এখন কষ্টকর হয়ে পড়েছে। শরীরটাও ভেঙে পড়েছে।
রফিকুল জানায়, ফাইলেরিয়া থেকে মুক্ত হতে পারলে জীবনটা নতুন করে শুরু করা যেত। কিন্তু অর্থের অভাবে তা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সে সমাজের বিত্তবানদের সহানুভূতি আশা করে।