২৪ ঘন্টায় ৮ হাজার ৪০৭ জনের আক্রান্তের খবর জানতে পারলাম। পরীক্ষা বিবেচনায় সনাক্তের হার ২৪.০% !! এই খবর গুলো পাচ্ছি ফেসবুকের নিউজফীড থেকে। মানে বিষয়টা মোটামুটি সবাই জানেন।
ভয়ংকরভাবে ক্রমবর্ধমান এই ইনফেকশন এর মধ্যে একটু আমাদের আশে পাশে তাকালে ‘হিমশীতল’ এক স্বাস্থ্যবিধি নজরে আসে। কোথায় আছে আমাদের মাস্কগুলো? কি অবস্থা আমাদের মাস্কগুলোর? কেমন চলছে বাণিজ্য মেলা? কেমন হচ্ছে ভিড়ের অনুষ্ঠানমালা আর গণজমায়েত-গুলো?
আদতে…
– আমরা মাস্ক পরছি না। আসলেই পরছি না। আক্ষরিক অর্থেই পরছি না।
– যারা পরছি, তারা ঠিক ভাবে পরছি না।
– কিছুক্ষণ পর পর মাস্ক নামিয়ে রাখছি থুঁতনিতে। অথবা পকেটে নিয়ে ঘুরছি। বা হাতের আঙ্গুলে দোলাতে দোলাতে নিয়ে যাচ্ছি।
– আমাদের মাস্কগুলো আমাদের জুতার থেকেও ময়লা হয়ে যাচ্ছে। আমরা তাও সেটা পরিবর্তন করছি না।
– রাস্তাঘাটে খোলা মাস্ক বিক্রী হচ্ছে।
– মাস্কের এপিঠ ওপিঠ সব পিঠে আমরা হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
– ৩-লেয়ারের মাস্ক পরতে বলা হলেও মাস্ক পরছি আমরা বিজ্ঞানকে কাঁচকলা দেখিয়ে। লেয়ার না, ডিজাইনটাই মুখ্য হয়ে যাচ্ছে। লোগোটাই মুখ্য হয়ে যাচ্ছে।
– হাঁচি-কাশি দেবার সময় মাস্কটা নামিয়ে দিচ্ছি।
– পুণঃব্যবহারযোগ্য মাস্কগুলো ধুয়ে নেবার প্রয়োজন মনে করছি না।
আরো ভয়ংকর কথা হলোঃ আমরা এক দুর্দান্ত “আতœতুষ্টি” তে ভুগছি।
যে, ‘ওমিক্রন’ ভ্যারিয়ান্ট টা ভালো। এটায় মানুষ মরে না। এটায় শ্বাসকষ্ট হয় না। এটায় হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় না। ‘গবেষণা’ ও ‘অদ্যাবধি অতিক্রান্ত সময়’ দিয়েও মেডিকেল সাইন্স যেখানে কোন রোগের ব্যাপারে ভবিষৎবাণী করে না। সেখানে আমরা দৈববাণী শুনতে পেয়েছি যে “ওমিক্রন খুব ভালো ভ্যারিয়ান্ট”
আবার আমরা খালি চোখে দেখতেও পাচ্ছ্,ি কোনটা ওমিক্রন, কোনটা ডেলটা। ভ্যারিয়ান্ট চিনে ফেলার অদ্ভূত প্রখর এক ক্ষমতা তৈরী হয়েছে আমাদের।
অবশ্য এই সব কিছুর জন্য দায়ী আমাদের গণমাধ্যমের একটি অংশ, আমাদের টকশো বুদ্ধিজীবীদের একটি অংশ, আমাদের চিকিৎসকদের একটি অংশ এবং সর্বোপরি আমাদের নির্বুদ্ধিতা।
এই মুহুর্তে আমাদের সবারই পরিচিত মহলে কেউ না কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। কিছুদিনের মধ্যে আমাদের অফিসের বা পরিবারের কেউ না কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবেন। আজ যে ১০ জন মারা গেলেন, তাদের লাশ দেখে কি বলে দেওয়া যাবে, এটা ডেলটা-আক্রান্ত লাশ, না ওমিক্রন-আক্রান্ত লাশ? যার হারিয়েছে, শুধু সেই জানে, এই “হারানোর”… “এই চলে যাওয়ার”… কোন ভ্যারিয়ান্ট নেই।
এটা কোভিড-১৯।
এটা কোন ব্যবসা না। এটা কোন কৌতুক না। এটা কোন রাজনৈতিক ইস্যু না।
এটা একটা রোগ। শুধুমাত্র স্বাস্থ্যবিধি দিয়েই একে প্রতিরোধ করা যাবে।
স্বাস্থ্যবিধির নামে ফাইজলামি করা যাবে না।