রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের বড় ভবানীপুর গ্রামে কোয়েল পাখির খামারে শিয়াল ধরার ফাদে আটকা পড়েছে বিরল প্রজাতির একটি মেছো বাঘ।
শুক্রবার গভীর রাতে ওই এলাকার মোঃ ইকবাল হোসেন খানের কোয়েল পাখির খামারে ধরা পড়ে বাঘটি। এ সময় বাঘের হুঙ্কারে আতংকিত হয়ে শোর চিৎকার করে গ্রামবাসি। লাঠিশোঠা নিয়ে বাঘ মারতে গ্রামের রাস্তায় ছোটাছুটি করেন তারা। এক পর্যায়ে জানাজানি হয় ইকবাল খানের খামারে বাঘ ধরা পড়েছে। এরপর থেকেই এক নজর বাঘ দেখতে জরো হয় হাজারও গ্রামবাসি।
বড় ভবানীপুর গ্রামের ইকবাল খান জানান, তিনি তার বাড়ির উঠানে তিন বছর যাবৎ কোয়েল পাখি ও মুরগির খামার করে ব্যবসা করছেন। গত মাস থেকে তার খামারে রাতের বেলায় কোন বন্যপ্রানি এসে কোয়েল পাখি মেরে ফেলে ও কিছু পাখি খেতে শুরু করে এমন কি আস্তে আস্তে তার পরিমান বাড়তে থাকে গত এক সপ্তাহে কম পক্ষে এক হাজার কোয়েল পাখি মেরেছে আর এক মাসে তার লোকসান হয়েছে কম পক্ষে দুই লক্ষ টাকা।
ইকবাল হোসেন খানের ছেলে মুন্না খান রাজবাড়ীবিডিকে জানান, প্রথমে তার ধারনা ছিল শিয়ালে কোয়েল পাখি খেয়ে ফেলে তাই বাবার সাথে পরামর্শ করে একটি লোহার ফাদ তৈরি করা হয়। সেই ফাদেই ধরা পড়েছে মেছো বাঘটি।
ওই এলাকার আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম খান রাজবাড়ীবিডিকে জানান, আমাদের এলাকায় প্রচুর পরিমানে বড় বড় বাঁশঝাড় ও বিভিন্ন গাছের বাগান রয়েছে। তাই বিভিন্ন প্রকার বন্য প্রানি এই এলাকায় বসবাস করে। গ্রামবাসি প্রথমে ধারনা করেছিল এটি চিতা বাঘ কিন্তুু পড়ে জেনেছি এটি মেছো বাঘ। বাঘ তো বাঘই নাম শুনলেই ভয় পাচ্ছে গ্রামবাসি। গ্রামের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা বাগানের পাশ দিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে এখন পুরো গ্রামটি বাঘ আতংকে রয়েছে।
অপর এক গ্রামবাসি রেজা জানান, যেহেতু একটি বাঘ ধরা পড়েছে এই এলাকায় আরো বাঘ রয়েছে গ্রামবাসি ভয়ে আছে এখন এ থেকে পরিত্রানের জন্য সবাই কে আমরা বলেছি ভয় পাওয়ার কিছু নেই প্রয়োজনে রাতের বেলায় গ্রামে পাহারা দেওয়া হবে।
রাজবাড়ীর বন বিভাগের কর্মকর্তা মোঃ ইউনুস আলী রাজবাড়ীবিডিকে বলেন, বাঘ ধরার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি এটি একটি মেছো বাঘ। এই প্রজাতির বাঘ মানুষের কোন ক্ষতি করেনা। পুকুরের মাছ, ব্যঙ্গ, সাপ খেয়ে জিবন ধারন করে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এই প্রানিগুলোর প্রয়োজন আছে। আমরা মেছো বাঘটি উদ্ধার করে লোকালয় থেকে দুরে নিয়ে একটি বাগানে অবমুক্ত করেছি।