সোহেল রানা ॥
রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার জঙ্গল বাজারে প্রতিদিন তীব্র শীত উপেক্ষা করে ভোরে বসছে শ্রমিক বিক্রির হাট। বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন থেকে খুব ভোরে জড়ো হয়ে শ্রম বিক্রি করতে মানুষ।
বৃহস্পতিবার ভোরে সরেজমিন জঙ্গল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাংশা, হাবাসপুর, নারুয়া, চরঘিকমলা, অলংকারপুর, বালিয়াকান্দি, মধুখালী, শ্রীপুর, মাগুরা এলাকার বিভিন্ন লোকজন জড়ো হয়ে আছে। যেমন লোকজন জড়ো হচ্ছে তেমনি ভাবেই বিক্রি হয়ে চলে যাচ্ছে। বিক্রি হওয়ার পর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ শেষ করেই যার যার গন্তব্যে চলে যাবেন। প্রতিজন ৩৭০ টাকা থেকে শুরু করে ৪শত টাকা বিক্রি হয়েছে।
চরঘিকমলা গ্রামের ইমরান হোসেন জানায়, সে ফজরের আযানের সময় বাড়ী থেকে রওনা হয়ে পায়ে হেটেই জঙ্গল বাজারে আসেন। এরপর বিক্রি হয়েছেন ৩৮০ টাকায়। দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ শেষ করে বাড়ী চলে যাবেন।
চষাবিলা গ্রামের রতন ও মৃগীর হেদু জানান, তারা ভ্যান যোগে ৪-৫জন মিলে এক সাথে এসেছেন। বিক্রি হওয়ার পর কাজ শেষ করে ওই ভ্যানেই বাড়ীতে চলে যাবেন। এ অঞ্চলে পিঁয়াজের চাষ বেশি হওয়ার কারণে দুর-দুরান্ত থেকে এসেও বিক্রি হয়ে কাজ শেষ করে বাড়ীতে ফিরতে পারেন। এজন্য বিভিন্ন এলাকার লোকজন বেশি জড়ো হন।
অলংকারপুর গ্রামের আহম্মদ আলী ও মোহন ফকির রাজবাড়ীবিডিকে জানান, তাদের বাড়ীর কাছে হাট হওয়ার কারণে কোন কষ্ট করতে হয় না। পায়ে হেটে গিয়েই বিক্রি হন। কাজ শেষ করেই বাড়ী ফেরেন। প্রতিদিন ভোরে মানুষ বিক্রির হাট বসার কারণে পাংশা, শ্রীপুর, মধুখালী উপজেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ আসে ভ্যান, নসিমনসহ বিভিন্ন গাড়ী যোগে। কাজ শেষ করে আবার ফিরে যান।
শ্রমিক নিতে আসা হাফিজুল, অমল, কৃষ্ণ, হরেন্দ্রনাথ, এনামুল জানান, এখন পিয়াজের আবাদের মৌসুম চলছে। বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে লোকজন পাওয়া যায় না। এজন্য জঙ্গল বাজার থেকে প্রতিদিন যে যার মতো লোক দরকার তা সহজেই ক্রয় করে নিয়ে যান। এতে তাদের কাজও সহজে হয়। এখানে কেউ বিক্রি হতে এসে ফেরত যায় না। দুর-দুরান্ত থেকে যারা আসে তারা গাড়ী নিয়ে আসে। কাজ শেষ করার পর ওই গাড়ীতেই আবার ফেরত চলে যান।