রাজবাড়ীবিডি.কম ডেক্স
অবশেষে ভুয়া পুলিশ সুপার ‘এসপি মুন্নি’কে আটক করেছে ফরিদপুর র্যাব ৮-এর একটি দল। বৃহস্পতিবার ভোররাতে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের সোনাইতন্দী গ্রাম থেকে তাঁকে আটক করা হয়।
এসপি মুন্নির আসল নাম রিনা বেগম (৪৫)। তাঁর স্বামীর নাম মতিয়ার লস্কর। রিনা দীর্ঘদিন ধরে মাগুরা ও পাশের জেলার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন।
র্যাব ৮- জানায়, রিনা বেগম বিভিন্নজনের কাছে ফোন করে পুলিশে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাতেন এবং তাঁর সঙ্গে লালমনিরহাট জেলায় কর্মরত ‘এসপি মুন্নি’র খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে বলে জানাতেন। এরপর আগ্রহী ব্যক্তিদের তাঁর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে বলতেন। লোকজন তাঁর বাড়িতে গেলে তিনি চাকরির জন্য কয়েক লাখ টাকা দাবি করতেন এবং এই টাকা এসপি মুন্নির কাছে তিনি পৌঁছে দেবেন বলে জানাতেন। তখন তিনি পুলিশের পোশাক পরা এক তরুণীর ছবি দেখিয়ে এটি এসপি মুন্নি বলে দাবি করেন। এরপর লোকজনকে এসপি মুন্নির মুঠোফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলতেন। লোকজন এসপি মুন্নির মুঠোফোনে কল দিলে ফোনটি ধরতেন রিনা বেগম। তিনি কণ্ঠ পাল্টে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিতেন এবং টাকা রিনাকে দিতে বলতেন। লোকজন সেই মোতাবেক রিনাকে টাকা দিতেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হাটফাজিলপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর বিশ্বাসকে (৩০) পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং দেড় ভরি স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেন রিনা বেগম। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও পুলিশের চাকরি না হওয়ায় তিনি প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন। এরপর তিনি বিষয়টি লিখিতভাবে র্যাব-৮, ফরিদপুর ক্যাম্পকে অবহিত করেন। তদন্তে নামে র্যাব।
র্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রইছ উদ্দিন জানান, তাঁর নেতৃত্বে র্যাব সদস্যরা প্রতারণার সঙ্গে জড়িত রিনা বেগমকে (৪৫) নিজ বাড়ি থেকে আটক করেন। এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীর বিশ্বাস বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার মাগুরার শ্রীপুর থানায় একটি প্রতারণার মামলা করেছেন।
আটক রিনা বেগম সাংবাদিকদের জানান, ‘এসপি মুন্নি’ নামে কেউ নেই। তিনি নিজেই বিভিন্ন সময় মোবাইল ফোনে নিজের কণ্ঠস্বর পরিবর্তন করে এসপি মুন্নি নামধারণ করে আসছেন।
এ সময় রিনা বেগম ‘এসপি মুন্নি’র কণ্ঠস্বরে কথা বলে সাংবাদিকদের শোনান।