আবদুল হালিম বাবু ॥
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা ও কাউন্সিল অধিবেশনের মধ্যে জেলা কৃষক সমিতির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাউন্সিল অধিবেশন শেষে সংগঠনের ২১ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
‘সার, বীজ, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের দাম কমাও। পাটের দাম সর্বনি¤œ তিনহাজার টাকা ধার্য কর। ধান, পাটসহ কৃষি ফসলের লাভজনক দাম চাই’ স্লোগান ধারণ করে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। শহরের রেলগেট শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি চত্বরে উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। এসময় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে সংগঠনের শিল্পীরা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আইনজীবী এস এম এ সবুর। উদ্বোধন উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা কমিটির সভাপতি মুজিব আলম বকুল। এতে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য আইনজীবী মানিক মজুমদার, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) আবদুস সামাদ মিয়া, জেলা কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তার মন্ডল, জেলা ক্ষেতমুজুর সমিতির সভাপতি আবুল কালাম, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হালিম বাবু। সভা পরিচালনা করেন আজিজুল হাসান ও সুকুমার রায়।
কাউন্সিল অধিবেশন শেষে আবদুস সাত্তার মন্ডলকে সভাপতি, সুকুমার রায়কে সাধারণ সম্পাদক ও পারভেজ সিকদার সিরাজকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ২১সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়।
উদ্বোধক এস এম এ সবুর তাঁর বক্তব্যে বলেন, কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ফসল উৎপাদন করে। খেয়ে না খেয়ে ফসলের পরিচর্যা করে। ফসল কেটে বাড়ি এনে বিক্রয় উপযোগি করে। ভালো ফসলটি নিজেরা খেতে পারে না। কিন্তু বিক্রি করার সময় ন্যায্য দাম পায় না। আসল টাকা ওঠায় অনেক কৃষক দিনমুজুরে পরিণত হচ্ছে। সরকার দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে চাচ্ছে। কিন্তু কৃষকেরা যদি তাদের আয়-রোজগার বাড়াতে না পারে তাহলে কাদের নিয়ে তিনি মধ্যম আয়ের দেশ করবেন।
জেলা সিপিবি’র সভাপতি আবদুস সামাদ মিয়া বলেন, গ্রামের হাটগুলোতে কৃষককে প্রতিনিয়ত হয়রানীর শিকার হতে হয়। ৪০ কেজির স্থলে তাদের কাছ থেকে ৪৮ কেজি নেওয়া হয়। প্রতিবাদ করলে মারধোর। কৃষক ব্যাংক লোনের টাকা সময়মতো দিতে না পারলে কোমড়ে রশি বেধে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু বাজারে নিয়মিত হয়রানি হলেও তার কোনো বিচার পায় না।
কৃষক সমিতির সভাপতি মুজিব আলম বলেন, সরকার সবকিছুর দাম নির্ধারন করে দেয়। কিন্তু ফসলের দাম নির্ধারন করে না। এ জেলায় পাট ও বিভিন্ন প্রকার ডাউল খুব ভালো হয়। কিন্তু কোনো সরকারী পাটকল বা ডালের কল নেই।
আলোচনা শেষে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের পাঁচতলা মোড়, রেলস্টেশন, বাটার মোড় হয়ে আজাদি ময়দানে এসে শেষ হয়। দুপুরের মধ্যহ্ন বিরতির পর উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী কার্যালয়ে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। ্অধিবেশনে সংগঠনের জেলা কমিটিসহ সদর, কালুখালী, পাংশা, বালিয়াকান্দি ও গোয়ালন্দ উপজেলার প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহন করেন।