সোহেল রানা ॥
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ভীমনগর গ্রামের প্রবাসীর ২ ছেলে তাজিন ও তৌশিক মানিকগঞ্জের হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। বাবার অনুপস্থিতিতে তার মাও থাকে নরসিংদী ভগ্নিপতির বাসায়। মাদ্রাসা থেকে দু,ভাই ছুটি নিয়ে বেড়াতে যায় নরসিংদী। সেখান থেকে বেড়ানো শেষে মানিকগঞ্জে ফিরছিল দু,ভাই। গত ১১ নভেম্বর দুপুরে টুঙ্গি থেকে বাসে উঠে নবীনগর নামে। বাসে একজনের সাথে কথা হয় তাদের দু,জনের। এরপর তার একটি ছেলে ওই মাদ্রাসায় ভর্তির কথা বলে মাদ্রাসার সুপারের মোবাইল নম্বর নেয় এবং তার চাচা বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফারুক হোসেনের মোবাইল নম্বর নেয়। এরপর মাদ্রাসার সুপার ও তার চাচার কাছে ফোন করে জানায়, তাজিন ও তৌশিক সড়ক দুঘর্টনায় গুরুতর আহত হয়ে নবীনগর হাসপাতালে আছে। এখনই রক্ত না দিলে বাঁচানো যাবে না। ওদের মায়ের নম্বর দেন। মায়ের নম্বর নিয়ে ফোন করে একই কথা। সন্তানের বিপদের কথা মা শুনে দ্রুত বিকাশের মাধ্যমে ৮হাজার টাকা পাঠিয়ে রওনা দেন হাসপাতালের উদ্দেশ্যে। এরই মধ্যে মাদ্রাসা সুপার ফোন করে জানায় তাজিন ও তৌশিক ভালো ভাবে মাদ্রাসায় পৌঁছেছে। যারা ফোন করেছে এটা একটি প্রতারক চক্রের কাজ।
বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফারুক হোসেন জানান, আসলে হঠাৎ করেই এমন ফোন আসায় আমরা বুজতে পারিনি। সবাই রওনা হই। ৮ হাজার টাকা পাঠানোর পর মাদ্রাসার সুপার ফোন করে প্রতারনার বিষয়টি জানাজানি হয়।
শুধু তাই নয় সারা দেশে হ্যালো স্যার আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন, গ্রামীণ ফোনের লটারীতে আপনার একটি গাড়ী, ফ্লাট, নগদ টাকা পেয়েছেন। আপনি খুব সৌভাগ্যেবান ব্যাক্তি, তাই আপনাকে এ পুরস্কার নিতে হলে এখনই এ নম্বরটিতে বিকাশের মাধ্যমে দাবীকৃত টাকা দিন। কাউকে বললে সে আপনাকে নিষেধ করবে। আবার কখনোও গভীর রাতে সুমধুর নারী ও পুরুষ কন্ঠে নানা ধর্মীয় ও স্বর্ণালংকার পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়। আবার নারীরা প্রেমের অভিনয় করে হাতিয়ে নেয় অর্থ। এভাবেই গ্রামীণ, টেলিটক, বাংলালিংক, রবি, ইয়ারটেলসহ বিভিন্ন ধরনের মোবাইলের সিম ব্যবহার করে প্রতারনা করে আসছে ওয়েলকামপার্টির সদস্যরা।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের সোনাকান্দর, নারুয়া, বাকসাডাঙ্গী, মরাবিলা, মধুপুরসহ পার্শ্ববর্তী গ্রাম গুলোর প্রায় ২শতাধিক উঠতি বয়সী যুবকরা এ প্রতারনার কাজে জড়িত। অনেকের বাড়ীর দিকে তাকালেই বোঝা যায় তারা এ কাজে জড়িত। আগে বাড়ীতে কোন ঘর ছিল না, এখন বিল্ডিং, দামী মোটর সাইকেল, মোবাইলসহ নানা ভাবে ফুলে ফেপে উঠেছে। প্রশাসন মাঝে মাঝে এদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাসহ গ্রেফতার করলেও জামিনে মুক্তি পেয়ে পুনরায় এ প্রতারনার কাজে জড়িয়ে পড়ে। প্রশাসনকে নজরদারী বাড়ানোর দাবী জানিয়েছেন।