সোহেল রানা ॥
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলাতে শীতকালীন সবজি চাষ বদলে দিয়েছে বহু কৃষকের ভাগ্যে। এ বছর আশানুরূপ দামের থেকেও বেশি দাম পাওয়ায় কৃষকরাও খুশি। ফলে আরও বেশি সবজি চাষে ঝুকছে এ উপজেলার কৃষকরা।
তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করেই এখন কৃষকরা ঘরে তুলছেন নগদ অর্থ। আর এ শীত মৌসুমে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা আগ্রহের সঙ্গে ট্রাকে করে লাখ লাখ টাকার ফুলকপি, বাঁধা কপি, বেগুন, কুমড়া, সিম, লাউ, বরবটি, পালংশাক, লাল শাকসহ বিভিন্ন সবজি নিয়ে যাচ্ছেন।
এ উপজেলার অনেক কৃষক শীতকালীন সবজি চাষ করে নগদ অর্থের মুখ দেখেছেন। আর এ দৃশ্য দেখে ও বাজারে সবজির দাম বেশি থাকায় বর্তমান এলাকার কৃষকরা সবজি চাষে ঝুকে পড়ছেন। এ অঞ্চলে এক জমিতেই ৩বার কপি চাষ করে।
কপি চাষে বিখ্যাত জামালপুর ইউনিয়নের নলিয়া, ছাবনীপাড়া, নটাপাড়া এলাকার কৃষকরা জানান, এ বছর কপি চাষ করে আগাম বিক্রি করে ভালো লাভবান হয়েছেন। দ্বিতীয়বারও লাগানো কপি এখন বিক্রি হচ্ছে। তৃতীয়বার লাগানো গাছও সতেজ হয়ে উঠেছে। কপির ফলন ভালো ও দামও ভালো থাকায় এবার বেশি লাভবান হবেন। আগে রবিশস্য চাষাবাদ করতেন। তাতে খরচই উঠত না। কষ্টে করে দিন কাটত তাদের। সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। অনেক ভেবে চিন্তে শুরু করেন লাউ, কপি, মরিচ ও কুমড়া চাষ। কপি চাষের শুরুতেই আসে তার সফলতা। এরপর আর পেছনে ফিরে দেখতে হয়নি।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে শত শত বিঘা জমিতে চাষ করছেন কৃষকরা সবজি। অন্যান্য সবজি চাষের পাশাপাশি ব্যাপকভাবে চাষ হয়েছে বাঁধাকপি ও ফুলকপি, সিম, বরবটি, লাল শাক।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, এক বিঘা জমিতে বাঁধাকপি চাষ করতে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। আর এই বাঁধাকপি বিক্রয় করছেন প্রতি পিস ৩৫ থেকে ৪০ টাকা করে। এক বিঘা জমি থেকে প্রায় চার-পাঁচ হাজার বাঁধাকপি বিক্রয় করা যায়। সব মিলে তাদের লাভ থাকবে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা।
সরজমিনে স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি কাতিশাল সিম ১২০ টাকা, বাঁধাকপি ৩৫-৪০ টাকা, ফুলকপি ৩৫-৪৫ টাকা, ওলকপি ৪৫ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, পটোল ২৫ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, মুলা ২০-২৫ টাকা, শসা ৪০ টাকা, খিরা ৫৫-৬৫ টাকা, টমেটো ৮০-১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০-৬০ টাকায়, পালং শাক ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ সাখাওয়াত হোসেন জানান, এ বছর এখন পর্যন্ত উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে বিভিন্ন স্থানে শীতকালীন সবজি চাষবাদ হয়েছে। সবজি চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে তারা বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। বাজারে সবজির দাম ভালো থাকায় এলাকার কৃষকরা সবজি চাষ আরও বেশি করে চাষাবাদ করছেন। এ বছর আরও কয়েকশত একর জমিতে সবজি চাষাবাদ বৃদ্ধি পাবে।