স্টাফ রিপোর্টার ॥
রাজবাড়ীতে কর্মরত দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলার প্রতিবাদে গোয়ালন্দে সাংবাদিকরা মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। গোয়ালন্দ প্রেসক্লাব বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করে।
রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি ও রাজবাড়ীকণ্ঠের সম্পাদক এ্যাড. খান মো. জহুরুল হক ও দৈনিক কালেরকণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিউর রহমান নবাব।
ঘন্টাব্যাপী চলা এ মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালেরকণ্ঠের উপজেলা প্রতিনিধি গণেশ পাল, সাধারন সম্পাদক ও দৈনিক আমার সংবাদ প্রতিনিধি আক্তারুজ্জামান মৃধা, দৈনিক সমকাল প্রতিনিধি ও রাজবাড়ীবিডি অনলাইনের সম্পাদক আসজাদ হোসেন আজু, প্রথম আলো প্রতিনিধি এম রাশেদুল হক রায়হান, ইত্তেফাক সংবাদদাতা আবুল হোসেন, নয়াদিগন্ত সংবাদদাতা মেহেদুল হাসান আক্কাছ, নিউজ২৪ চ্যানেলের জেলা প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম শামীম, প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক ও রাজবাড়ীবিডি অনলাইনের বার্তাসম্পাদক কুদ্দুসুল আলম, আলোকিত বাংলাদেশ সংবাদদাতা উদয় দাস।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ৮ নভেম্বর বুধবার স্থানীয় দৈনিক “রাজবাড়ী কণ্ঠ” পত্রিকায় “কালিকাপুর ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নামে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার চাল হরিলুট” এছাড়া জাতীয় দৈনিক “কালের কণ্ঠ” পত্রিকার প্রিয়দেশ পাতায় ১১ নভেম্বর “কোটি টাকা আষাঢ়ে গল্প ” এই শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এই সংবাদ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবী করে জেলার কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিউর রহমান নবাব। ১২ নভেম্বর রোববার রাজবাড়ীর ২নং আমলী আদালতে ২ কোটি টাকার মানহানির একটি মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য কালুখালী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
জানাগেছে, রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নে মাত্র দুই তিন দিনে ১৪৭ টি ওয়াজ মাহ্ফিল এবং ৩ টি নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হয়েছে। আর ওই সব ওয়াজ মাহফিল ও নামযজ্ঞ অনুষ্ঠানের একই দিনে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ১৫০ টি প্রকল্পের বিপরীতে ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা মূল্যের ৪ শত ৫০ মেট্রিক টন চালের ছাড়পত্রও প্রদান করা হয়েছে। যদিও প্রকল্প গুলোর মেয়াদ ছিলো মাত্র দুই দিন। যা কি না চলতি বছরের ২৯ জুন থেকে ৩০ জুনের মধ্যে সমাপ্ত হয়েছে। অথচ সে সময় ছিলো আষাঢ় মাস। জেলা প্রশাসক, রাজবাড়ীর ২৮-৬-১৭ ইং তারিখের স্মারক নং ৫১.০১.৮২০০.৪২.০৮.১৬/৬৭৬(২) পত্র মোতাবেক কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের ১৫০টি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য ৪শ ৫০ মেঃটন জিআর চাউল বরাদ্দ করা হয়। এ বরাদ্দের প্রেক্ষিতে গত ২৯/৬/১৭ ইং তারিখে পৃথক তিনটি পত্রের মাধ্যমে কালুখালীর ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নাজমুল ইসলাম এসব প্রকল্পের অনুকুলে জিআর চালের ছাড়পত্র প্রদান করেন। এরপর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মকসেদুল আলম ও কালিকাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিউর রহমান নবাব এসব প্রকল্পের ভুয়া পিআইসি সাজিয়ে সমুদয় চাল উত্তোলন করেন। ৩০ হাজার টাকা টন হিসেবে ৪৫০ মেট্রিক টন চাউলের বর্তমান বাজার মূল্য ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা।
এদিকে, ওই মিথ্যা মামলা দায়েরের পরেই আইনজীবি, রাজনীতিবীদ, সাংবাদিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সুশীল সমাজ নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।