গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে শাহনাজ পারভীন স্বপ্না ওরফে শশী (২৮) নামের এক তরুনীকে গলাকেটে হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় হাতেনাতে রনি মোল্লা নামের এক খুনিকে আটক করে স্থানীয়রা। সে মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের কৌড়ি গ্রামের সোহরাব মোল্লার ছেলে। পরপর একাধিক এ ধরনের ঘটনা ঘটায় দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
থানা পুলিশ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর যৌনকর্মী শশীর ঘরে খদ্দের হয়ে প্রবেশ করে রনি। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রনি বিশেষ মুহুর্তে তার কাছে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে শশীর গলায় টান মারে। এসময় শশী চিৎকার দিয়ে দৌড় দেয়। এসময় রনি তাকে পেছন থেকে আবারো ছুরি দিয়ে কোপ মারে। এতে শশী ঘরের দরজা খুলে সেখানে পড়ে যায়। স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে এসে রনিকে ছুরিসহ হাতেনাতে আটক করে পুলিশে খবর দেয়।
এদিকে আহত শশীকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার অবস্থা গুরুতর দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। সেখানে নেয়ার পথেই শশীর মৃত্যু হয়।
দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর বাসিন্দা সেলিনা খাতুন জানান, সম্প্রতি একই কায়দায় যৌনকর্মীদের গলাকেটে হত্যা ও হত্যাচেষ্টায় পল্লীর বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। তিনি আরো জানান, বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতারিত হয়ে জীবনের সব কিছু হারিয়ে এই অন্ধকার জীবন বেঁছে নেয়া মানুষ গুলোকে এ ভাবে হত্যার বিষয়টি এখানে নতুন করে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানান, ঘাতক রনি ও তার অপর বন্ধু এর আগে একাধিক বার খদ্দের হয়ে শশীর ঘরে এসেছিল। সে সময় যৌনকর্মী শশীর নগদ টাকা ও স্বণালংকারের উপর নজর পড়ে তাদের। তারা পরিকল্পনা করে শশীকে খুন করে তার ঘর থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করার। সে অনুযায়ী রনি খদ্দের হয়ে শশীর ঘরে প্রবেশ করে এবং তার অপর বন্ধু বাইরে অপেক্ষা করে। রনি পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শশীর গলায় ছুরি চালায়। কিন্তু শশীর প্রাণে বাঁচার শেষ চেষ্টায় তারা সফল হতে পারেনি।
এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. এজাজ শফীা জানান, এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. এজাজ শফীা জানান, এ ঘটনায় নিহত শশীর বোন মিতু বাদি হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ইতিমধ্যে রনি হত্যাকান্ডের বিষয়টি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। তার জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য শুক্রবার বিকেলে রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হলে আদালতেও সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত অপর আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত আছে।