সোহেল রানা ॥
স্ত্রী কমলা দাস পা চেপে ধরে রাখে, বিল্লাল হাত ধরে রাখে, আলাল বুকের উপর উঠে বসে আর আজিজুল শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। হত্যার পর গাছের সাথে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে।
৪ বছর পর রাজবাড়ী জেলা সিআইডির পরিদর্শক শেখ মোঃ আক্তারুজ্জামান বৃহস্পতিবার নিহত ভ্যান চালক সুবির দাসের স্ত্রী কমলা দাসকে গ্রেফতার করে। পরে রাজবাড়ী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধি গ্রহন করে।
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ঠাঁকুর নওপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক সুবির দাস (৪০) হত্যা সম্পর্কে আদালতে এ চাঞ্চল্যেকর স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করে নিহতের স্ত্রী কমলা দাস। নিহত সুবির দাস উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ঠাঁকুর নওপাড়া গ্রামের সুধির দাসের ছেলে।
স্বীকারোক্তিতে কমলা দাস বলেন, তার ছেলে প্রসেনজিৎ দাস, চিরজিৎ দাস ও কন্যা লাবনী দাসকে বাড়ীতে রেখে লিবিয়া অবস্থান করে। সেখানে থাকাবস্থায় তার স্বামীকে ভুলবোঝায় তোর স্ত্রী সেখানে খারাপ কাজ করছে। এর এক বছর পর ২০১৪ সালের জানুয়ারী মাসে বাড়ীতে ফিরিয়ে আনে। দেশে আসার পর সুবির তাকে ভুল বুঝতে থাকে ও অবিশ্বাস করতে থাকে। বিদেশে তুই অবৈধ কাজ করেছিস এখানে অবৈধ কাজ করে টাকা এনে দিবি। তার স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অবৈধ কাজে নামতে বাধ্য হয়। বিদেশে যাওয়ার সময় তার স্বামী বিল্লাল, আলাল, আজিজুলদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিল। তারা বাড়ীতে আসতে থাকে এবং তার স্বামী তাকে তাদের সাথে অবৈধ কাজ করতে বাধ্য করে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তার স্বামীকে হত্যার জন্য আজিজুলদের সাথে পরিকল্পনা করে। ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাতে সে তার স্বামীকে বলে একটি লোক আসবে কিছু টাকা দিবে। একথা বলে রাত ১২টার দিকে বাড়ীর পাশের একটি মেহগনি বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে তারা পরিকল্পনা মাফিক তার স্বামীকে হত্যা করে। লাশ গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। এরপর বাড়ীতে এসে প্রবিরকে জানায় তার ভাইকে পাওয়া যাচ্ছে না। পরদিন সুবিরের লাশ পাওয়া যায়।
এব্যাপারে প্রবীর কুমার দাস বাদী হয়ে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর বালিয়াকান্দি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর একাধিক তদন্ত কর্মকর্তার হাত বদলের পর এস,আই জাকির হোসেন ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল আদালতে চার্জশীর্ট প্রদান করেন। চার্জশীটে মামলার বাদী প্রবীর কুমার দাস নাজারী দিলে মামলাটি সিআইডির উপর তদন্ত অর্পন করে। এ মামলার অন্যান্য আসামীরা পলাতক রয়েছে।