হঠাৎ ফাল্গুনের ঘনকুয়াশায় দেশের ব্যস্ততম দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে মঙ্গলবার সকালে টানা ৪ ঘন্টা ফেরি, লঞ্চসহ সকল প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধ ছিল। এসময় যানবাহন ও যাত্রী বোঝাই করে উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে গিয়ে মাঝ নদীতে গিয়ে আটকা পড়ে ৭টি ফেরি।
দীর্ঘ সময় নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকা ও চলাচলকারী তিনটি ফেরি বিকল থাকায় দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় মহাসড়কে নদী পারাপারের অপেক্ষায় আটকা পড়ে কয়েশ বিভিন্ন যানবাহন। এতেকরে ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে নদী অববাহিকায় হালকা কুয়াশা পড়তে থাকে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেলে এক পর্যায়ে নৌযান চলাচল ঝুকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এ পরিস্থিতিতে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ ভোর সাড়ে ৪টা থেকে নৌরুটের ফেরি, লঞ্চসহ সকল প্রকার নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে। এর আগে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাট থেকে যানবাহন ও যাত্রী বোঝাই করে ছেড়ে গিয়ে ৭টি ফেরি মাঝনদীতে দিক হারিয়ে নোঙর করে থাকতে বাধ্য হয়। রুটে চলাচলকারী অপর ফেরিগুলো ঘাটে ভিরে থাকে। পরে কুয়াশার ঘনত্ব কমে এলে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে পুনরায় ফেরি ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের ফেবি বহরের ইউটিলিটি ফেরি মাধবীলতা যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিকল হয়ে গত সোমবার থেকে পাটুরিয়ার ভাসমান কারখানায় মেরামতে আছে। এছাড়া রোরো ফেরি শাহজালাল এক সপ্তাহ আগে বড় মেরামতের জন্য নারায়নগঞ্জ ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে। অপর রোরো ফেরি শাহ মখদুম এক মাসেরও বেশী সময় ধরে বিকল হয়ে পরে রয়েছে। ঘাটসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, দুই ঘন্টা ফেরিসার্ভিস বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় নদীপারাপারের অপেক্ষায় ৫ শতাধিক বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের বাংলাদেশ হ্যাচারীজ পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার জুড়ে নদী পারের অপেক্ষায় অন্তত ৫ শতাধিক বিভিন্ন যানবাহনের দীর্ঘ সারি। এরমধ্যে যাত্রীবাহ বাস ও পন্যবাহী ট্রাক রয়েছে। তবে যাত্রীবাহি বাস অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করায় আটকে পড়া পন্যবাহি ট্রাকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়াঘাট ব্যবস্থাপক মো. সফিকুল ইসলাম জানান, ফাল্গুনের হঠাৎ ঘনকুয়াশায় মঙ্গলবার টানা ৪ ঘন্টা ফেরি সার্ভিস বন্ধ থাকায় যানবাহনগুলো সিরিয়ালে আটকা পড়েছে। রুটে মোট ১৫টি ফেরি যানাবাহন পারাপার করছে। বিকল ফেরি গুলোর মধ্যে ইউটিলিটি ফেরি মাধবীলতা দ্রুত সময়ের মধ্যে চলাচল শুরু করবে। আশা করছি কম সময়ের মধ্যেই আটকে থাকা যানবাহনগুলো নদী পারাপার করা সম্ভব হবে।