কোন প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বুধবার কর্মদিবসে সোনালী ব্যাংক গোয়ালন্দ উপজেলা কমপ্লেক্স শাখার প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে লেন-দেন বন্ধ রাখা হয়। এতে করে বয়ষ্করা ভাতা নিতে আসা অর্ধ শতাধিক বৃদ্ধসহ সাধারন গ্রাহকরা চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছেন।
জানাগেছে, তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গোয়ালন্দে ভোট গ্রহন হবে আগামী ২৪ মার্চ। এ উপলক্ষে নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয় বুধবার। সেই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহন করতেই ব্যাংকে তালা ঝুলিয়ে সকল কর্মকর্তা কর্মচারী এক যোগে প্রশিক্ষণ নিতে গেছেন।
সরেজমিন বুধবার বেলা ১২ টার দিকে সোনালী ব্যাংকের উপজেলা কমপ্লেক্স শাখায় গিয়ে দেখা যায়, ব্যাংকের প্রধান ফটকে তালা মারা। আর বাইরে অপেক্ষা করছে শতাধিক বয়বৃদ্ধ মানুষ। মাঝে মাঝে সাধারন গ্রাহকরা জরুরী প্রয়োজনে ব্যাংকে আসছেন। তবে তারা ব্যাংকে তালা মারা দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
এসময় কথা হয় বয়স্ক ভাতা নিতে আসা উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের মোকছেদ আলী (৭২), মনির উদ্দিন শেখ (৬৮), দৌলতদিয়া ইউনিয়নের আমেনা বেগম (৭৫), রহিমা বেগম (৬৫) সহ অনেকের সাথে। তারা জানান, ভাতা নিতে ব্যাংকে অনেক ভীর হয়। তাই তারা ভোর ৬ টার মধ্যে ব্যাংকে এসে সিরিয়ালে আছেন। কিন্তু দুপুর হতে চললো ব্যাংক খুলছে না। এই বয়সে এত হয়রানী আর ভালো লাগে না। ব্যাংকের মধ্যে একজন মানুষ আছে সে বলছে ২ টার পরে ব্যাংকে লেন-দেন শুরু হবে।
ব্যাংকের প্রধান ফটকে তালা মেরে ভেতরে বসে থাকা সিকিউরিটি গার্ড মোঃ শাহিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাই নির্বাচনের ট্রেনিং দিতে গেছে। বেলা ২ টায় ট্রেনিং শেষ হবে। স্যাররা ট্রেনিং শেষে ফিরে আসলে ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হবে। বন্ধের ব্যাপারে কোন নোটিশ দেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুই দিন আগে ট্রেনিংয়ের চিঠি পেয়েছে, তাই নোটিশ দেয়ার সময় পায়নি তারা।
এ বিষয়ে কথা হয় গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ মোয়াজ্জেম হোসেনের সাথে। তিনি জানান, ব্যাংকিং কার্যক্রম অতি জরুরী একটা বিষয়। আমিও একটু আগে ব্যাংকে লোক পাঠিয়েছিলাম। কাজ না করেই ফিরে এসেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কলেজের এক শিক্ষক জানান, তাদের কলেজের অন্তত ২০ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া হয়নি। তাদের নির্বাচনী দায়িত্ব দিয়ে জরুরী সংস্থাগুলোর দায়িত্ব মুক্ত রাখলে এ দূর্ভোগের সৃষ্টি হতো না।
সোনালী ব্যাংক গোয়ালন্দ উপজেলা কমপ্লেক্স শাখার ব্যবস্থাপক মাহবুবুর আলম মিন্টু জানান, রাষ্ট্রীয় কাজে দায়িত্ব পড়লে তা না করার সুযোগ থাকে না। তাই লেন-দেন বন্ধ রেখে প্রশিক্ষণে যেতে হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে বেলা ২টা থেকে ব্যাংকে লেন-দেন যথারীতি শুরু হয়েছে। তিনি আরো বলেন, কোন কর্মদিবসে বন্ধের নোটিশ দেয়ার এখতিয়ার তার নেই। তবে আগের দিন যারা ব্যাংকে এসেছিলেন তাদেরকে মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছিল।
এ ব্যাপারে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্বপন সাহাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। ফোনে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত আছি, পরে ফোন দিয়েন’।