ব্যাটারিচালিত যাত্রীবাহী ভ্যানে করে আট মাসের সন্তানকে কোলে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন মা তামান্না আক্তার। হঠাৎ বেপরোয়া ট্রাকের ধাক্কায় ভ্যান থেকে ছিটকে পড়ে চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় শিশুটি। মা তামান্না এ দৃশ্য দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ট্রাকের চাকায় তারও দুই পা থেঁতলে গেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে দৌলতদিয়া-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার পাইকারা এলাকায় ঘটে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা। নিহত মায়েশা একই উপজেলার পাকশিয়া গ্রামের প্রবাসী ইসলাম মণ্ডলের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, শিশু মায়েশাকে কোলে করে ভ্যানে চড়ে কালুখালী থেকে নিজেদের বাড়ি ফিরছিলেন তামান্না।
হঠাৎ কুষ্টিয়াগামী একটি বেপরোয়া ট্রাক ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মায়েশা মায়ের কোল থেকে ছিটকে ট্রাকের চাকার নিচে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আট মাসের শিশুটির। গুরুতর আহত হন মা তামান্না। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, তামান্নার দুই পা থেঁতলে হাড় গুঁড়া হয়ে গেছে। তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার জ্ঞান ফিরেছে। শরীরে প্রচণ্ড ব্যথায় কাতর তামান্না বারবারই প্রিয় কন্যাকে খুঁজছেন।
গান্ধীমারা হাইওয়ে থানার এসআই রেজাউল করিম জানান, দুর্ঘটনার পর মহাসড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ট্রাক ও চালক সোহেল রানাকে আটক করা হয়েছে। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার দরবেশপুর এলাকায়।
নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, দুই ছেলে আর একমাত্র মেয়ে মায়েশাকে নিয়ে ইসলাম মণ্ডলের সংসার। রাজমিস্ত্রির কাজ করা ইসলাম মণ্ডল ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে কাতার চলে যান।