তৃতীয় ধাপে সারা দেশের ১১৭ উপজেলার ন্যায় রাজবাড়ী সদর, গোয়ালন্দ, পাংশা ও বালিয়াকান্দি উপজেলায় রোববার সকাল ৮টা থেকে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটগ্রহণ চলেছে। একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহন করা হয়। তবে সকাল থেকেই বেশীর ভাগ ভোটকেন্দ্রে ভোটাদের খড়া চলেছে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গোয়ালন্দ উপজেলা উজানচর ইউনিয়নের নবুওসিমদ্দিন পাড়া কেন্দ্র গিয়ে দেখা যায়, ভোটকেন্দ্রে কাথাও কোন ভোটারের লম্বা লাইন নেই। কিছুক্ষন পর পর দু’একজন ভোটার ভোট দিতে আসছেন। এসময় কথা হয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা আব্দস সামাদের সাথে। তিনি জানান, বেলা ১২ পর্যন্ত কেন্দ্রের ৬টি বুথের মধ্যে ৫ নং বুথে ২জন ও ২নং বুথে ৮জন সহ মোট ৫৭৪ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন।
এর আগে দুদুখান পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, পুরো কেন্দ্র প্রায় ভোটারশুন্য। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ ভোট গ্রহনে সংশ্লিষ্টরা অনেকটা অলস সময় কাটাচ্ছে। ভোটকেন্দ্রের বাইরে কয়েকজন ভোটার জানান, চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন না থাকায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী থাকলেও ভোটারদের তেমন একটা আগ্রহ নেই। সকাল ১০টায় জামতলা হাইস্কুল কেন্দ্রে কয়েকজন নারী ভোটার চোখে পড়লেও পুরুষ ভোটার চোখে পড়েনি। সরেজমিনে রবিবার বিকেল দুইটার সময় রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের চাদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখাযায় সেখানে ২৭৮৩ ভোটের বিপরীতে মাত্র ৪৭ টি ভোট পরেছে।
এরপর রাজবাড়ী শহরের সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় সেখানে ভোটারের কোন লাইন নেই। তবে দুই একজন করে আসছে ভোট দিয়ে চলে যাচ্ছে। দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসারের সাথে কথা বলে জানা যায় এই কেন্দ্রে সাড়ে তিন হাজার ভোটার থাকলেও আড়াইটা পর্যন্ত ভোট পরেছে ৫০৩ টি।
এদিকে বালিয়াকান্দি উপজেলায় ভোট কেন্দ্র গুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল কম এবং কিছু কিছু কেন্দ্র নারী ভোটারদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। তবে দুপুরের পরে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা প্রার্থী ও ভোট গ্রহন কর্মকর্তাদের।
বালিয়াকান্দি মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা শেখ মো: ওয়াহিদুজ্জামান এর দেওয়া তথ্য মতে বেলা ১১.২৫ মিনিট পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ৮টি বুথে ৩০৩৭ জন ভোটারের মধ্যে ভোট পড়েছে ৬৯৫টি। তিনি বলেন শান্তিপূর্ণ শৃংখলভাবে ভোট গ্রহণ চলছে। ভোটারদের ভীড় না থাকলেও একে একে ভোট দিয়ে কেন্দ্র ছাড়ছেন ভোটাররা। এছাড়া অপর উপজেলা গুলোতেও বেশীর ভাগ ভোট কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি আশানুরূপ নয় বলে জানা গেছে।
রাজবাড়ীর ৪টি উপজেলায় ৮ জন চেয়ারম্যান, ১৫ জন পুরুষ ও ৮ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দ¦ীতা করছেন। এর মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী এবিএম নুরুল ইসলাম।
নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নির্বচন সুষ্ঠ করতে নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে নির্বাচনী মাঠে রয়েছে ২৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেড, ১ হাজার ২৯৪ জন পুলিশ, ৩ হাজার ১৯২ জন আনসার ভিডিপি, ৯ প্লাটুন বিজিবি ও ৬৪ জন র্যাব সদস্য। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্বাচনী এলাকা গুলোর বিভিন্ন স্থানে টহল দিতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, রাজবাড়ীর চার উপজেলায় মোট ভোটার ৬ লাখ ৯১ হাজার ৫৮৫ জন। এতে পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৫৫ জন ও মহিলা ভোটার ৩ লাখ ৪২ হাজার ৫৩১ জন এবং মোট ভোট কেন্দ্র ২৬৬টি।